চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
সোহাগী জাহান তনু হত্যাকা-ের ১৮ ঘণ্টা আগে ৮টি মোবাইল নাম্বার থেকে অনেকবার ফোন করা হয়েছিলো। ফোন নম্বর ও সেটের আইডি নম্বর উদ্ধার করা গেলেও এখনও শনাক্ত করা যায়নি কলারকে। জানা গেছে, এ সব ফোনের একটি কলও রিসিভ করেননি তনু। গোয়েন্দারা পরীক্ষা করে বুঝতে পেরেছেন, ওই নম্বরগুলো থেকে শুধু তনুকেই ফোন করা হয়েছে, অন্য আর কাউকে করা হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ এ সূত্র হত্যাকারীকে ধরতে তদন্ত সংস্থা সিআইডিকে আশাবাদী করে তুলেছে। নাম প্রকাশ না করে সিআইডির এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, এ ফোন কলারকে শনাক্ত করা গেলেই রহস্য অনেকটা পরিষ্কার হতে পারে।
এদিকে, তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ধর্ষণের কোনো আলামত না পাওয়া কিংবা মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট না হওয়ার বিষয়ে সিআইডির ওই তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এই প্রতিবেদনের চেয়ে সিআইডির কাছে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। কারণ প্রথম ময়নাতদন্তের কিছু গড়মিল লক্ষ্য করেই দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করা হয়েছিলো। পুলিশ আগেই প্রথম ময়না তদন্তের বিষয়ে ধারণা নিলেও গত সোমবার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে ময়নাতদন্ত কমিটির প্রধান ড. কামদা প্রসাদ সাহা। তিনি জানান, তনুকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর কারণও জানা যায়নি বলে দাবি করেন তিনি। গত ২১ মার্চ তনুর মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক ও মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক শারমিন সুলতানা তনুর প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জমা দেন। তবে, পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ মার্চ দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়। চিকিৎসকরা আবারো তনুর মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন।
এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ, তালিকায় আরো ৭/৮ জন
আলোচিত এ হত্যা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান বলেন, এরইমধ্যে তনুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলাসহ ২৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ‘এতে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। যার ভিত্তিতে আরো ৭/৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিআইডি।’ এই হত্যাকা-ের ছায়া তদন্ত করছে এলিট ফোর্স র্যাব। আর তদন্তকাজে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী।
গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকার কাছে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী এবং সংস্কৃতিকর্মী সোহাগী জাহান তনুর (২০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকা-ের পর তনুর খুনিদের গ্রেপ্তার এবং দ্রুত বিচারের দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করছে গণজাগরণ মঞ্চ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বিভিন্ন নারী সংগঠন এবং বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।