দ্য বিডি এক্সপ্রেস.কমঃ
সরকারের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র থেমে নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের ঊষালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘ষড়যন্ত্র যে থেমে গেছে তা কিন্তু নয়।’
আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে সমর্থনকারী ‘শক্তিধর দেশের’ শিকার হয়েই বঙ্গবন্ধুকে জীবন দিতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটের সেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে জাতির পিতা ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট শহীদ হন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার কথাও উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ প্রধান।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতার ৯৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সততার শক্তি দিয়ে আমরা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেছি। সততাই শক্তি। সততা থাকলে জোর গলায় কথা বলা যায়। যে কোনো পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়। যে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মধ্যে আমরা পড়তে গিয়েছিলাম- সততা ছিল বলেই সেটা মোকাবিলা করার শক্তি পেয়েছি।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন গর্বের- মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে পদ্মা সেতুর মতো বিশাল প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করতে পারছি একটা কারণে। বাঙালি জাতি হিসেবে এটা আমাদের গর্ব ছিল, চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের ওপর যখন অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, সেই অপবাদ আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে হত্যা, ক্যুর রাজনীতি শুরু হয়েছিল- বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখনকার দিনে বিশ্বে দুটি ভাগ ছিল। যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন করেনি, পাকিস্তানি হানাদারদের সমর্থন করেছিল তাদেরও তো ষড়যন্ত্র ছিল। তাদের কথা কেউ শুনলো না, দেশ স্বাধীন হয়ে গেল, পাকিস্তান পরাজিত হয়ে গেল। বিশ্বের শক্তিধর দেশ তাদের সঙ্গে থেকেও তাদের জেতাতে পারলো না। তারা এই পরাজয় সহজে অনেকে মেনে নেয়নি। তাই তাদের ষড়যন্ত্র চলছিল। আর সেই ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন জাতির পিতা। পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্টে। সেদিন শুধু জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে তা নয়; আমার মাসহ ১৮ জনকে হত্যা করে ঘাতকের দল।
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশ এগিয়ে যাক, এটা তারা চায় না। পরাজিত শক্তি তাদের সেই পাকিস্তানি প্রভূদের তারা ভুলতেই পারে না। বিএনপির আন্দোলন মানে মানুষ হত্যা। ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে দিনের পর দিন মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে। প্রায় আড়াইশর ওপর মানুষকে হত্যা করেছে। মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। মানুষ পুড়িয়ে হত্যার চেয়ে জঘন্য কাজ আর হতে পারে না।
খালেদা জিয়া বলেছিলেই সরকার উৎখাত করে ঘরে ফিরবেন, কিন্তু তাকে নাকে খত দিয়ে ঘরে ফিরতে হয়েছে। তিনি বলেন, মানুষ আমাদের নির্বাচিত করে ক্ষমতায় এনেছে বলেই আজ আমরা দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারছি। খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সফলতা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, সতীশ চন্দ্র রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মেসবাহ উদ্দিন সিরাজ, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। সভা সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ