বিডিএক্সপ্রেসঃ ১০ ডিসেম্বর: ভারতের আগ্রায় গণধর্মান্তরকরণ কর্মসূচির বিরুদ্ধে সংসদে সোচ্চার হয়েছেন বিরোধীরা। একইসঙ্গে দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনা বাড়তে থাকায় বিতর্কের দাবি জানান বিরোধী সংসদ সদস্যরা।
মঙ্গলবার এ নিয়ে হইচই হওয়ার পর আজ (বুধবার) আলোচনায় রাজি হয় সরকার পক্ষ। বিরোধীদের দাবি- দেওয়ালির সময় দিল্লির ত্রিলোকপুরিতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ, ক’দিন আগেই দিল্লিতে চার্চ পুড়িয়ে দেয়া এবং আগ্রায় ২০০ জন মুসলিমকে হিন্দু ধর্মে দীক্ষা দেয়ার ঘটনায় দেশে সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
‘পুরখো কে ঘর ওয়াপসি’ নাম দিয়ে আরএসএস'র শাখা সংগঠন ধর্ম জাগরণ সমন্বয় বিভাগ ও বজরং দলের যৌথ উদ্যোগে ৫৭টি মুসলিম পরিবারকে ধর্মান্তরিত করা হয় গত সোমবার।
আজ (বুধবার) রাজ্যসভায় এ প্রসঙ্গ তোলেন বিএসপি প্রধান মায়াবতী। তিনি বলেন, ‘কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ম পরিবর্তন করিয়েছে। যদি এসব বন্ধ না করা হয়, তাহলে দেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বেড়ে যাবে।’ মায়াবতী এজন্য বিজেপি এবং আরএসএসকে দায়ী করেন।
মায়াবতীকে সমর্থন করে তীব্র প্রতিবাদে শামিল হন অন্য বিরোধী সদস্যরা। এই ঘটনার নিন্দা জানান কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং, সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরিসহ অন্যরা প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবি জানান। জেডিইউ নেতা আলী আনোয়ার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, এটা বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবারের পুরনো এজেন্ডা।
আজ সরকারপক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাকভি বিএসপি প্রধান মায়াবতীর উদ্দেশ্যে এ ব্যাপারে কোনো সংগঠনের নাম না করতে পরামর্শ দেন। এ ঘটনা রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারের বিষয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির নেতা রাজেন্দ্র চৌধুরী বলেছেন, ‘রাজ্যে জোর করে ধর্মান্তকরণ বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার তদন্ত করা হবে।’
এদিকে, সোমবার ধর্ম পরিবর্তনে শামিল হওয়া কতিপয় পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে দেওরি রোড এলাকায় যেখানে ধর্ম পরিবর্তন করা হয়েছিল, সেখানে তদন্তের জন্য যায় পুলিশ এবং এখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় বিষয় লিপিবদ্ধ করেন।
বিপিএল কার্ডসহ বিভিন্ন প্রকারের সুযোগ সুবিধার প্রলোভন দেয়া হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। বিজেপি এবং শিবসেনা জোর করে ধর্ম পরিবর্তনের কথা অস্বীকার করেছে।
এর আগে, আরএসএস'র মুখপাত্র রাজেশ্বর সিংয়ের দাবি করেন, ধর্মান্তরিত ব্যক্তিদের পরিবার কয়েক প্রজন্ম আগে হিন্দু ছিল, তাদের জোর করে ইসলাম ধর্মে নেয়া হয়। তাই তাদের হিন্দু ধর্মে দীক্ষা নেয়া আসলে ‘ঘরে ফেরা’রই সামিল। ক্রিসমাসের মধ্যে আরো ৫ হাজার মুসলিম ও খ্রিস্টানকে ধর্মান্তরিত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান রাজেশ্বর।
এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় রাজনৈতিকমহলে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারও ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছে।