রহমান মুশফিক।। দ্য বিডি এক্সপ্রেস ডটকমঃ
কাশ্মীরে চলমান বিক্ষোভ সামাল দিতে ব্যর্থ মোদি সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রচারণা শুরু করেছে।কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের আন্দোলন ও প্রতিবাদকে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কাশ্মীরের উরিতে সাম্প্রতিক হামলার পর নিয়ন্ত্রণরেখার কাচাকাছি ব্যপক সমরশক্তির সমাবেশ ঘটাচ্ছে ভারত। অধীকৃত কাশ্মিরে নিরপরাধ সাধারণ মানুষের উপর নিরাপত্তাবাহিনীর ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যখন আন্তর্জাতিক মহল সোচ্ছার ঠিক তখনি উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ভিন্ন খাতে ঘুরিয়ে দিতে নির্লজ্জভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত। এরই অংশ হিসেবে কাশ্মিরের উরি শহরে সেনাঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ।তিনি আরও বলেন ভারতীয় অবৈধ দখলদারিত্ব ও দমন-পীড়নের দীর্ঘ ইতিহাসের কারণে এ পরিণতি সৃষ্টি হয়েছে।কাশ্মীরের উরির একটি সেনা-ঘাটিতে রোববার রাতে একদল বন্দুকধারীর হামলায় ১৮ জন সৈন্য নিহত হবার পর ভারত পাকিস্হানের বিরুদ্ধে রণহুঙ্কার দিয়ে পাকিস্হানে হামলা করার অজুহাত খুঁজছে। দিল্লিতে সিনিয়র মন্ত্রী ও সেনা কমান্ডারের সাথে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি কড়া ভাষায় পাকিস্হানকে দোষারোপ করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং তার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানকেও একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বলে আখ্যায়িত করে বলেন সারা বিশ্বের উচিত পাকিস্হানকে একঘরে করে ফেলা। যদিও পাকিস্তান এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা জোরালো ভাবে অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের একজন সরকারি মুখপাত্র বলেছেন, কিছু হলেই প্রথা মাফিক দোষারোপ না করে ভারতের উচিৎ হামলার সুষ্ট তদন্ত করা।চিরবৈরী দেশদুটি কাশ্মির নিয়ে তিনটি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে।উভয়দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে জঙ্গিহামলার অভিযোগ প্রায়ই করে থাকে। জাতিসংঘ ৭১তম সাধারণ অধিবেশনে পাকিস্হান যখন কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে জোরালো অবস্হান নিতে যাচ্ছে,ঠিক তখনই উরির ঘটনা ভারত পাকিস্হানকে উল্টো চাপে রাখার মোক্ষম হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। উরির ঘটনা ভারত অধিকৃত কাশ্মিীরে ব্যাপক মানবািধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা চাপা পড়ে যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কাশ্মির থেকে সব পক্ষের সেনা প্রত্যাহার ও জাতিসংঘের তত্বাবধানে গনভোট আয়োজনের একটি প্রস্তাব পাশ করে।ভারত গনভোটের প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে সেনা প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে।কাশ্মীরে দীর্ঘদিন ধরে দমন পীড়ন মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক উৎকন্ঠা তৈরী হয়।জাতিসংঙ্গের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দলের কাশ্মীরে আসা নিয়ে মাত্র এক সপ্তাহ আগেই প্রবল চাপের মধ্যে ছিল নয়াদিল্লি। উরির ঘটনার পরে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দিতে ভারত সেই কমিশনের সামনে দাঁড়িয়েই সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ইসলামাবাদকে তুলোধনা করে।কাশ্মীর উপত্যকায় আজ ৭৪তম দিনের মত সবকিছু অচল হয়ে রয়েছে। সেখানে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এপর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশী লোক নিহত হয়। গত ২৪ ঘন্টায় কাশ্মীরে আরও ৬৪ জন তরুণকে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী।